শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১২

মু‘জিযা ও যাদুর মধ্যে পার্থক্য

বিশেষজ্ঞ আলিমদের মতে  মু‘জযা এবং যাদুর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে ঃ
১.যাদুবিদ্যা শিক্ষার মাধ্যমে হাসিল করা হয়, কিন্তু মু‘জিযা শিক্ষার মাধ্যমে হাসিল করা যায় না। বরং আল্লাহ তা‘আলা যখন ইচ্ছা করেছেন তখন তিনি নবী-সাসূলগণের মাধ্যমে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
২.যাদুর মুকাবিলা করা সম্ভব। তাই এক যাদুকর অন্য যাদুকরের যাদুকে নস্যাত করে দিতে পারে । কিন্তু মু‘জিযার মুকাবিলা করা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
৩. যাদুর কোন বাস্তবতা নেই। বরং যাদু হচ্ছে একটি দৃষ্টিবিভ্রম ও সম্মোহনজনিত বিষয়। পক্ষান্তরে মু‘জিযা কোন কৃষ্টিবিভ্রম বা কাল্পনিক বিষয় নয়। বরং মু‘জিযা হচ্ছে বাস্তব ঘটনা যা আল্লাহর কুতরতের নিদর্শন।
৪.যাদু প্রদর্শন করা হয় পার্থিব স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য । আর মু‘জযার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয় দীনের সত্যতা প্রকাশের জন্য।
৫.যাদুকর তার ইচ্ছানুযায়ী যাদু প্রকাশ করতে পারে, কিন্তু মু‘জিযার প্রকাশ নির্ভর করে একমাত্র আল্লাহর তাআলার ইচ্ছার উপর।

মু‘জিযার তাৎপর্য

মু‘জিযা শব্দটি আরবী। এর আভিধানিক অর্থ পরাভূতকারী। আল্লামা তাফ্তাযানী (র) মু‘জিযার পারিভাষিক অর্থ এভাবে বর্ণনা করেছেন যে ঃ
“ মু‘জিযা বলা হয়, নবুওয়াত অস্বীকারকারীদের সাথে চ্যালেঞ্জ করার সময় নবুওয়াত প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি হতে এমন অলৌকিক কাজ সংঘটিত হওয়া যার মুকাবিলা করতে অবিশ্বাসী সম্প্রদায় অক্ষম। ” 
বস্তুত মু‘জিযা প্রকাশের উদ্দেশ্য হল, নবী-রাসূলগণের দাবীর সত্যতা প্রমাণ করা এবং তাদের দাবীকে শক্তিশালী করা।
মু‘জযাকে আল রুরআনে ‘আয়াত’ ও ‘বুরহান’ বলা হয়েছে। আয়াত শব্দের অর্থ নিদর্শন বা আলামত। মু‘জিযা যেহেতু নবী-রাসূলগণের দাবীর পক্ষে নিদর্শন, তাই মু‘জিযাকে ‘আয়াত’ বলা হয়েছে। অনুরূপভাবে এসব বিষয় নবী-রাসূলগণের আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত হওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ স্বরূপ হওয়ায় এগুলোকে কুরআন মাজীদে ‘বুরহান’ অর্থাৎ প্রমাণ বলা হয়েছে।